ডুলহাজারী সাফারী পার্ক ও নানা কথা
তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন
মর্ম মুছায়ে ।
তব, পূণ্য-কিরণ দিয়ে যাক্, মোর
মোহ-কালিমা ঘুচায়ে।…
সাফারি পার্কে মানে কক্সবাজার ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক। আহ! মন লোভা দৃশ্য,না দেখলে ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।
আমরা জানি, বন-সাগর-পাহাড়-নদী-ঝরনা নিয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজার।দেশের বাইরে অনেক দেশে কত কিছু আমি দেখেছি দেখেছি সুন্দর রমনী,সোনার কাঁকন,,অঙ্গভঙ্গি,মিষ্টি চাহনি,সাজসজ্জা আর কত কি তবে বন-সাগর-পাহাড় এত কাছাকাছি আমি অন্তত দেখেনি।
এটি কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলায় অবস্থিত।এটি ‘ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক’ নামে বর্তমানে পরিচিত।বর্তমানে পার্কটি বুনো জীবজন্তুর সমাহারে জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
তবে প্রাণীদের রক্ষানাবেক্ষণে অযত্ন আমাকে ব্যথিত করেছে।পরিদর্শনে আমার সাথে ছিলেন কলম একাডেমি লন্ডন এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী,মামা কুতুব।পার্ক পরিদর্শনে মামা কুতুবের আন্তরিকতা সত্যিই প্রশংসনীয়।
এরপর যার আন্তরিকতার অভাব ছিলনা তিনি হলেন আমার বন্ধুবর আবদুল হাকিম।বাকিরা হলেন আলমগীর হোসাইন,বেলাল হোসেন সিরাজী,আবু সুফিয়ান চানুবী।কি যেন এক অজানা কারনে সিরাজী আর চানুবীর উপাধির মারপ্যাচে গাড়িতে আমি কয়েক মিনিট হুশ হারিয়ে ফেলি।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবীর শতভাগ নিশ্চয়তা মুহুর্তে হুশ ফিরে পাই বলে আলমগীর হোসাইন নিশ্চিত করেছেন।
সে যাই হোক,আপনি এখানে আসলে বাঘ, সিংহ ও তৃণ ভোজী প্রাণীর বিচরণ দেখে মুগ্ধ হবেন তাতে সন্দেহ নেই।
তাহাছাড়া যে কেউ চাইলেই পার্কের ভিতরে অপেক্ষমান বাসে করে ঘুরে ঘুরে পুরো পার্ক দেখতে পারবেন তবে তার জন্য ৫০০-৬০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। প্রবেশ করতে আমরা জনপ্রতি ৫০/ টাকা করে দিয়েছি আর আমাদের গাড়ীর জন্য দিতে হয়েছে মাত্র ১০০/টাকা।
পার্কে আসলে আপনি দেখতে পাবেন তথ্য শিক্ষাকেন্দ্র, প্রাকৃতিক ঐতিহাসিক জাদুঘর এবং বিশ্রামাগার। প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত নির্জন উঁচু-নিচু টিলা, প্রবহমান ছড়া, হ্রদ, বিচিত্র গর্জনের মতো সুউচ্চ ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক বৃক্ষ চিরসবুজ বনের জানা-অজানা গাছ- গাছালি, ফল-ভেষজ উদ্ভিদ, লতার অপূর্ব উদ্ভিদের সমাহার ও ঘন আচ্ছাদন।
এই পার্কে না আসলে আপনি জীবন কি এর ধরন কত প্রকার,জীবনের রং কেমন তার সম্পর্কে আপনার কোন ধারনা থাকবে না।শুধু থাকবে হাহাকার তাই অন্তরকে নির্মল করতে এই পার্ক পরিদর্শনের কোন বিকল্প নেই।
ছায়াঘেরা পথ,সবুজ বনানী, জানা-অজানা গাছের সারি, পাখি আর বানরের কিচিরমিচির সব কিছু মিলিয়ে যেন এক অসাধারণ অনুভূতি।দেখতে চাইলে আজই চলে আসতে পারেন।
এখানে আসলে সবর্ত্র দেখা যাবে বানর আর বানর যেন বানরের পার্ক।পরিদর্শনের সময় বানরের সাথে কে যেন আমার একটি ছবি তুলেছিল সে ছবি ডারউইনের মতবাদ সহ অনেক কিছু আমাকে মনে করিয়ে দেয়।
এ পার্কে মিষ্টি পানির কুমির যেমন আছে, তেমনি আছে লোনা পানির কুমির। বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে জেব্রা, বাঘ, সিংহ, হাতি, ভালুক, গয়াল, জলহস্তী, মায়া হরিণ, সাম্বা হরিণ, চিত্রা হরিণ, প্যারা হরিণসহ পাখ-পাখালির সমাহার। পথের ধারে উঁচু ওয়াচ টাওয়ারে উঠে যে কেউ দেখতে পারবেন পুরো পার্কের সীমানা পর্যন্ত। উপভোগ করতে পারবেন পার্কের অপার সৌন্দর্য,চাইলে যে কাউকে ও সঙ্গে নিতে পারেন।
লেখক- মোঃ কামরুল ইসলাম।
কবি ও প্রাবন্ধিক।
Discussion about this post