নিউজ ডেস্ক :
বিপ্লব উদ্যানকে সবুয়ায়নের মাধ্যমে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন চট্টগ্রাম নগরীর বিশিষ্টজন, নগর পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশ রক্ষায় আন্দোলনকারী কর্মীরা।
বিপ্লব উদ্যান নিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। সিটি কর্পোরেশন কনফারেন্স রুমে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্ব সভায় মতামত ব্যক্ত করেন প্রফেসর ডা. এমরান বিন ইউনুস, স্থপতি জেরিন হোসেন, প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া, প্রফেসর ড. ইমরান বিন ইউনুস, স্থপতি আশিক ইমরান, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সালাউদ্দিন মো. রেজা, আসমা আকতার, হাসান মারুফ রুমি, শফিক আনোয়ার, হুমায়ন কবির, হাসান মারুফ রুমি, সাংবাদিকনেতা শাহনেওয়াজ প্রমুখ।
বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাবুল চন্দ বণিক, মো. আল আমিন হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা ইনসিয়াত মো. আলী আকবর, আহমেদ ইকবাল হায়দার, তাসলিমা মুনা, রিতু পারভীন, মনিরা পারভীন রুবা, ফারমিন এলাহি, লায়ন এম.এ হোসেন বাদল, ফারুক আহমদ, আবু সুফিয়ান রাশেদ, রায়হান বাদশা, শ.ম বখতিয়ার, নিজাম সিদ্দিকী, সাবাইতা সুলতানা ইতু, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মো. জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মনীষা মহাজন, চৈতী সর্ববিদ্যা, হুমায়ুন কবির চৌধুরী, মো. সাব্বির রাহমান সানি, মোহাম্মদ ইকবাল হসান, মেহেরীন, শামিলা রিমা, মোহাম্মদ জিয়াউল হক, মো. আশরাফ হোসেন, স্থপতি তুহিন বড়ুয়া, মো. আবদুর রহিম প্রমুখ।
সভার শুরুতে বিপ্লব উদ্যানের পূর্বের ও বর্তমান অবস্থান নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্থপতি আবদুল্লাহ-আল-ওমর।
প্রফেসর ডা. ইমরান বিন ইউনুস বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে প্রায় ৮০ লাখ মানুষের বসবাস। এই নগরীকে সবার বাস উপযোগী করা লাগবে। তাই বিপ্লব উদ্যান নিয়ে সবাইকে সমন্বয় করে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ সময় তিনি উড়ান সড়কের ডিভাইডারে পার্কিং স্পেস করার পরামর্শ দেন।
প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন বাসযোগ্য চট্টগ্রাম নগরী গড়তে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশনকে দ্রæত সাহসী পদক্ষেপ নিতে বলেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে কোন প্ল্যানিং ইনস্টিটিউশন নাই বলে চট্টগ্রাম নগরীতে জঞ্জাল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে উড়াল সড়কে অপরিকল্পিত র্যাম্প স্থাপন না করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে পত্র দিতে বলেন।
সভায় স্থপতি জেরিনা হোসেন বলেন বিপ্লব উদ্যানের সবুজায়নের পাশাপাশি ফুটপাতকে জনপরিসরে হাটার উপযোগী করার আহŸান জানান। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন আইন অনুসারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উন্মুক্ত স্থান রক্ষায় দায়িত্ব নেয়ার কথা থাকলেও বিপ্লব উদ্যানের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ উদ্যানের বাণিজ্যিকীকরণ হয়ে গেছে। নাগরিকদের স্বার্থে বিপ্লব উদ্যানকে আবারো নাগরিকদের উদ্যান হিসেবে ফিরিয়ে আনতে হবে।
স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, বিপ্লব উদ্যানে ডিজাইনের বাইরে প্রচুর স্থাপনা ও দোকান হয়েছে। আমরা স্থপতিদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সংগঠনের সকল সদস্যকে বিপ্লব উদ্যানের ডিজাইনের বাইরে কোন প্ল্যান না করার জন্য বলেছি। নগরীর সৌন্দর্য্যরে স্বার্থে আমাদের বক্তব্য হলো অবিলম্বে বিপ্লব উদ্যান থেকে অননুমোদিত দোকান স্থাপনা সরিয়ে গাছপাড়া লাগিয়ে সবুজায়নের ব্যবস্থা করা। তিনি সভায় অংশনেয়া সকলকে তাদের মতামত ও জ্ঞানগুলেঅ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টদের সাথে আদান-প্রদানের অনুরোধ জানান।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা বলেন, বিপ্লব উদ্যানের পূর্বের সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। এই উদ্যানে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের স্মৃতি বিজড়িত অনেক স্মৃতি ছিল। এটিকে পূর্বের দুই মেয়রের সময়ে নেয়া কার্যক্রম বন্ধ করে পূর্বের ন্যায় সবুজায়ন করতে হবে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক জাহিদুল করিম কচি বলেন, বিপ্লব উদ্যানকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণার স্মৃতি রক্ষায় সিটি কর্পোরেশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা অধিকার রক্ষা পরিষদের আহবায়ক আসমা আকতার বলেন, আইন অনুযায়ী একটি উদ্যানে ২-৫ শতাংশের বেশি কংক্রিটের স্থাপনা রাখার সুযোগ নেই। কিন্তু বিপ্লব উদ্যানে এর চাইতে অনেক বেশি কংক্রিটের স্থাপনা বর্তমানে আছে। তাই এই উদ্যানকে সবুজায়ন করে সববয়সী নাগরিকের অবকাশ যাপনে পূর্বের ন্যায় ব্যবস্থা করতে হবে কর্পোরেশনকে। এজন্য সবুজায়ন বৃদ্ধি করা লাগবে।
রাজনৈতিক কর্মী হাসান মারুফ রুমি বলেন, উন্নয়নের প্রথম শর্ত হলো পরিবেশ ও প্রাণীকুলকে রক্ষা করা। সবুজায়ন বৃদ্ধি করা। কিন্তু বিপ্লব উদ্যানে অপরিকল্পিত পরিকল্পনার মাধ্যমে ইট-পাথরের জঞ্জাল সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই এই উদ্যানকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে সবুজায়নের উদ্যোগ নিতে হবে কর্পোরেশনকে।
পরিবেশ কর্মী শফিক আনোয়ার আইকনিক স্থান হিসেবে বিপ্লব উদ্যানকে রক্ষার উদ্যোগ নিতে বলেন সিটি কর্পোরেশনকে।
দোকান মালিকদের পক্ষে হুমায়ন কবির বলেন, বিপ্লব উদ্যান আগে অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। মাদক বেচাকেনা হতো। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পূর্বের মেয়রের সময় ঠিকাদারদের মাধ্যমে দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়।
Discussion about this post