আমাদের দেশের গ্রামের মানুষরা বড় সহজ,সরল। আপনি বড় লোকের বাসায় যাবেন দেখবেন,তার
যেন সর্বক্ষেত্রে অভাব।এক কাপ চা দিতে ও তার খুব কষ্ট হবে অন্যদিকে গ্রামের সহজ সরল মানুষের মায়া, মমতা,আপ্যায়ন আপনি মনে রাখবেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।কেননা তাদের মনটা বড়ই উদার যেন সব মায়া মমতায় টুইটুম্বর।প্রদর্শিত ছবিটি তুলেছে আমার এক ঘনিষ্ট বন্ধুবর ড.এমদাদ চৌধুরী। পাশেই আমার বড় কুটুম।
মনে পড়ে ঐ সময়ে আকাশে হালকা রোদ ছিল।রোদ থাকলে ও যেন এই রোদ এই বৃষ্টি।এক কথায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে যেখানে গিয়েছি তারা সেখানে আমার সম্মানে বা অতিথি সম্মানে গল্পের ছলে মাছ শিকারের উদ্দেশ্য কাদে জাল নিয়ে পুকুরে মাছ শিকার,মাছের লাফালাফি,পাশে নারীদের কাঁথা সেলাই ও তাদের সাংসারিক জীবনের নানা কথা,নিজ নিজ স্বামীকে নিয়ে সইদের সাথে আলো,আঁধারের কত যে আনন্দের গল্প, দু চোখে গ্রামের মাঠজুড়ে শুধু সবুজ ফসল আর ফসল।ফসলী জমির চির চিরে পানিতে শুধু রুপালি কৈ।
আপনি অনুভব করবেন দখিনা বাতাস,দোলা দেবে আপনাকে যদি আপনি দুলতে জানেন। আঁকাবাঁকা ছোট নদী বা খালের দু’তীরে অবারিত সবুজ মাঠ।আপনার দু চোখে দেখবেন,গ্রাম আর গ্রাম মাঠ আর মাঠ।আমি সেই মেঠো পথের কথা বলছি,গ্রামে দেখবেন সারি সারি গাছপালা,বসতবাড়িতে শান বাঁধানো পুকুর ঘাট। সবকিছুই দেখলে মনে হবে এ যেন শিল্পীর রংতুলি দিয়ে আঁকা কোনো এক ছবি। যেমন মোনালিসার সেই মুসকি হাসি।আহ! প্রাণ জুড়িয়ে যায়।
করোনার এই বর্ষায় সর্বত্র হতাশা,ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা ভয়,অভাব,অনটন,বেঁচে থাকার অনিশ্চয়তা,তবুও বাংলার প্রকৃতি সেই পুরোনো আদলে হাসে, নিজের অজান্তে আপনাকে হাসাবে,যোগ করে নিত্য নতুন মাত্রা। জরাজীর্ণ গ্রীষ্মক্লান্ত প্রকৃতিকে বর্ষা তার আপন প্রেম পেয়ালার পবিত্র জলে স্নান করিয়ে সিক্ত করে তোলে। জলরঙে রাঙিয়ে দেয় আমার,আপনার পৃথিবী।
আশা করি খুব শীঘ্রই করোনা আমাদের করুণা করবে। আমাদের মুক্তি দিবে।
আমরা আবার বিচরন করবো সেই মেঠো পথে,কৃষাণীর কালো চুলের ভেজা গন্ধে মুখরিত হবে পুরো পরিবেশ।আর তখনি আমি গাইতে থাকবো-
“মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে
তাতা থৈথৈ, তাতা থৈথৈ, তাতা থৈথৈ।
তারি সঙ্গে কী মৃদঙ্গে সদা বাজে
তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ তাতা থৈথৈ”।
লেখক- কবি, প্রাবন্ধিক ও গণ-মাধ্যকর্মী।
Discussion about this post