ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গীয় আইন সভার নির্বাচিত সদস্য (১৯৩৭), বড়-ছোট ৪২টি গ্রন্থের প্রণেতা, কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা ও চট্টগ্রামের পশ্চিম পটিয়ায় দেয়াঙ পাহাড়ে জাতীয় আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার স্বপ্ননায়ক মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী’র ৭০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় নগরীর কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানায় মরহুমের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী’র নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের নামকরণ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে মরহুমের নামে প্রতিষ্ঠিত সড়কের নাম পুনঃনামকরণ, দেয়াঙ পাহাড়ে জাতীয় আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাস স্থাপন ও পাঠ্যপুস্তকে মরহুমের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানান।
উনবিংশ ও বিংশ শতকের যোগ সন্ধিক্ষণে ভারতীয় উপমহাদেশের জনগণের উপর নেমে আসা ঘোর তমসায় যে ক’জন সৈনিক যাত্রাপথ তৈরির সংগ্রামে এগিয়ে আসেন এবং বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে অবচেতন জাতিকে নকিবের মত জাগরণী বাণী শুনিয়েছেন তাঁদের মধ্যে মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী অন্যতম।
তিনি বাংলাভাষায় পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করেন মোহাম্মদী (১৯০৩,) বাসনা (১৯০৪), কোহিনূর (১৯১১), হাবলুল মতিন (১৯১২), দৈনিক আম্বর, দৈনিক সুলতান, দৈনিক আমির, সাপ্তাহিক ইসলামাবাদ, মাসিক আল ইসলাম, আল মানার, আল বিলাত, আল আহরাম। তিনি ল-ন থেকে প্রকাশিত দৈনিক যামানায় নিয়মিত প্রবন্ধ লিখতেন (১৯২০-১৯২৪)।
বিপ্লবী মনিরুজ্জামান ছিলেন একাধারে কল্যাণমুখী রাজনীতির চিন্তক, এতিম-অনাথ শিশুদের অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক, সম্পাদক-সাংবাদিক-সাহিত্যিক, কৃষক নেতা ও অনুবাদক।
ইতিহাসের কিংবদন্তী অগ্নিপুরুষ মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ১৮৭৫ সালে ২২ আগস্ট চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরমা, আড়ালিয়ারচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৫০ সালের ২৪ অক্টোবর ৭৫ বছর বয়সে চন্দনাইশেই ইন্তেকাল করেন। অসিয়ত অনুযায়ী তাঁর প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম শহরের মোমিন রোডস্থ কদম মোবারক এতিমখানা ও নবাব ইয়াসিন খান মসজিদ চত্বরে তাঁকে দাফন করা হয়।
আলোচনায় অংশ নেন-গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক যুগ্ম পরিচালক ফজল আহমদ, বৃহত্তর চট্টগ্রাম অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান, চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি সোহেল মো. ফখরুদ-দীন, অধ্যাপক মুছা কলিম উল্লাহ, প্রিমিয়ার হাসপাতালের জি.এম মো. আবু বকর, কবি আবু মুছা চৌধুরী, ব্যাংকার মো. একরামুল হক, মানবাধিকার কর্মী সালাউদ্দিন লিটন, রেজাউল করিম তালুকদার, প্রাথমিক চিকিৎসক সোসাইটির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ডা. মাহবুবুল আলম, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সজল দাশ, সহ-যোগাযোগ সম্পাদক শিপক কুমার নন্দী, মো. মোজাম্মেল হক শামীম প্রমুখ।
Discussion about this post